কোটচাঁদপুরে বৃহস্পতিবারের মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আরো ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে একই পরিবারের ৪ জনসহ প্রাণ গেল ৭ জনের। এ সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত আল আমিনকে (৬৫) যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকায় রেফার করা হলে বৃহস্পতিার রাত ১০টার দিকে পথিমধ্যে মানিকগঞ্জে তার মৃত্যু হয়। মৃত আল আমিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার বৈশামারী গ্রামের বাসিন্দা। অপরদিকে, ২৪ ঘণ্টা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ার পর গুরুতর আহত রিমা খাতুন (২৫) শুক্রবার বেলা ১১.৫০ মিনিটের দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। এ দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের ৪ জন রয়েছেন। তারা হলেন কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী গ্রামের রুবেলের স্ত্রী রীমা খাতুন (২৫), মা শিউলী বেগম (৫০), ভাগ্নি খুকু মনি (৭) ও ১ মাস ১০দিনের শিশু সন্তান রাফান। এদের মধ্যে ঘটনাস্থলেই শিশু রাফানসহ ৩ জন মৃত্যুবরণ করেন। আর শুক্রবার দুপুরে রীমা খাতুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। বাকি ২ জন হলেন কালীগঞ্জ উপজেলার ঘি-ঘাটি শাহপুরের ভ্যানচালক সলেমান (৬৫) ও একই উপজেলার ত্রিলোচানপুর গ্রামের টিটো শেখ (৪০)।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে দুর্ঘটনায় নিহত একই পরিবারের নিহত ৪ জনের গ্রামের বাড়িতে গেলে সেখানে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পরিবারের লোকজন স্বজন ও গ্রামবাসীর মধ্যে চলছিল শোকের মাতম। আপনজন হারানোর বেদনায় সবাই ছিলেন কাতর। রুবেল ও তার পিতা তোরাব সরদার বিলাপ করতে করতে মূর্ছা যাচ্ছিলেন। শোকে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। তোরাব সরদারের চাচাতো ভাই সোরাব সরদার জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তার পুত্রবধূ রীমা খাতুনের প্রথম রোজায় একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন। তার নাম রাখা রাফান। শিশু রাফানের নাভির সমস্যা ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফেরার পথে কোটচাঁদপুর কালীগঞ্জ সড়কের কাশিপুরে পৌর কলেজের সামনে পৌঁছালে ফার্মাসিউটিক্যালসের পণ্যবাহী একটি কাভার্ড ভ্যান তাদের বহনকারী ব্যাটারিচালিত ভ্যানকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে ৩ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে শিশু রাফানও ছিল। উল্লেখ্য, এ নিয়ে ওই ভ্যানের চালকসহ ৭ জনের সকলেই মৃত্যুবরণ করলেন। পুলিশ কাভার্ড ভ্যানটিকে আটক করেছে। কোটচাঁদপুর মডেল থানার ওসি মঈন উদ্দিন জানান, এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে। তবে তিনি নাম ঠিকানা না পাওয়ার কারণে কাভার্ড ভ্যানের চালককে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন।
Leave a Reply