চির যৌবন প্রাপ্ত হওয়ার নেশায় বাঘারপাড়ার বৃদ্ধকে খুন করে পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও চোখ নেয়া বিকৃত মনের খুনি লিটন, কবিরাজসহ গ্রেফতার-২, পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও চোখের মনি উদ্ধার।
গত ইং ৩০/০৫/২০২২ তারিখ সকাল অনুমান ০৯:০০ ঘটিকার সময় বাঘারপাড়া থানাধীন পশ্চিম পাইকপাড়া গ্রামে গৃহস্থ বেনজির আহম্মেদ এর বসতবাড়ী থেকে নকিম উদ্দিন (৬০), পিতামৃত- দলিল উদ্দিন, সাং-ধুপখালী, থানা-বাঘারপাড়া, জেলা-যশোর এর মৃতদেহ উদ্ধার করে বাঘারপাড়া থানা পুলিশ। জানা যায় ইং ২৬/০৫/২০২২ তারিখে নিহত নকিম উদ্দিন তার নিজ বাড়ীতে কাউকে কিছু না বলে বাঘারপাড়া ছাতিয়ানতলা বাজারে কৃষান দেওয়ার জন্য গেলে উক্ত বাজার থেকে নকিম উদ্দিনসহ ০৩ জন কৃষানকে গৃহস্থ বেনজির আহম্মেদ তার বাড়ীতে নিয়ে যায়। এর মধ্যে ১ জন কৃষান ২ দিন পরে চলে যায়। পরে ইং ৩০/০৫/২০২২ তারিখ সকাল অনুমান ০৬:০০ ঘটিকার সময় বাড়ীওয়ালা বেনজির আহম্মেদ কৃষানদের ডাকতে গেলে সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরের দরজা খুলে দেখতে পায় কৃষান নকিম উদ্দিনের মৃতদেহ খাটে পড়ে আছে। পাশে থাকা অজ্ঞাত কৃষানকে উক্ত ঘরে পাওয়া যায় না। নিহত কৃষান নকিম উদ্দিনের সুরতহাল করতে দেখা যায়, তার ১টি চোখ ও পুরুষাঙ্গ নাই। আশপাশ তল্লাশী করে নিহত নকিম উদ্দিনের ডান চোখের মনি ও পুরুষাঙ্গ খোঁজে পাওয়া যায় না।
এই ঘটনা সংক্রান্তে নিহত নকিম উদ্দিনের ছেলে মোঃ মাজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত লোকের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে বাঘারপাড়া থানার মামলা নং-১৮, তাং-৩১/০৫/২০২২ ইং ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।
ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর ও মর্মান্তিক হওয়ায় জেলার পুলিশ সুপার জনাব প্রলয় কুমার জোয়ারদার,বিপিএম (বার), পিপিএম মহোদয় ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের জন্য মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখাকে তদন্তভার প্রদান করেন।
জেলার পুলিশ সুপার মহোদয়ের দিক-নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ রুপন কুমার সরকার, পিপিএম এর তত্ত্বাবধানে ডিবি’র এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম ঘটনায় জড়িতদের সনাক্তপূর্বক মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শহিদুল ইসলাম এর নেতৃত্বে একটি চৌকশ টিম ইং ৩১/০৫/২০২২ তারিখ হইতে যশোর, মাগুরা, ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা শেষে ইং ০১/০৬/২০২২ তারিখ বেলা ১২:৩০ ঘটিকার সময় মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানাধীন চর ঘিওর মাঠে কৃষান সেজে অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার প্রধান আসামী হত্যাকারী পালিয়ে যাওয়া কৃষান লিটনকে গ্রেফতার করে তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক নিহত কৃষান নকিম উদ্দিনের চোখের মনি, অন্ডকোষ ও পুরুষাঙ্গ একটি খড়ের পাল্লা (বিছালী) এর মধ্য থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামী লিটনের স্বীকারোক্তি মোতাবেক একই দিন রাত ২২:৩০ ঘটিকার সময় চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা থানাধীন লোকনাথপুর সাকিনে অভিযান পরিচালনা করে হুকুম দাতা ও তান্ত্রিক কবিরাজ আঃ বারেককে গ্রেফতার করে তার বসত ঘর থেকে তান্ত্রিক কবিরাজীর বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করে জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তান্ত্রিক কবিরাজ আঃ বারেক এর নির্দেশে বিকৃত মানসিকতার অধিকারী লিটন যৌন শক্তি বৃদ্ধি ও চির যৌবন প্রাপ্ত হওয়ার নেশায় দীর্ঘদিন যাবৎ নর-হত্যা পূর্বক পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও চোখের মনি সংগ্রহ করার চেষ্টা করে। দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে কৃষানের কাজ, রিক্সা চালনা করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করে হত্যার চেষ্টা ও পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও চোখের মনি সংগ্রহের চেষ্টার একপর্যায়ে ইং ২৬/০৫/২০২২ তারিখে বাঘারপাড়া ছাতিয়ানতলা বাজারে এসে কৃষান হিসেবে নিয়োজিত হওয়ার আগে নিহত কৃষান নকিম উদ্দিনের সাথে তার পরিচয় হয়। নকিম উদ্দিনকে টার্গেট করে তার সাথে গৃহস্থ বেনজির আহম্মেদ এর বাড়ীতে কৃষানের কাজে নিয়োজিত হয়ে ইং ২৯/০৫/২০২২ তারিখ দিবাগত রাতে কবিরাজ বারেকের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে তার নির্দেশে রশি দিয়ে নকিম উদ্দিনের গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে বিকৃত মানসিকতার অধিকারী আসামী লিটন। হত্যা পরবর্তী পরিকল্পনা মোতাবেক লিটন নিহত কৃষান নকিম উদ্দিনের পুরুষাঙ্গ ও অন্ডকোষ কর্তন ও ডান চোখের মনি নিয়ে পালিয়ে যায় লিটন। আসামী লিটন আরো জানায়, ইতোপূর্বে তান্ত্রিক কবিরাজ আঃ বারেক তাকে যৌন শক্তি বৃদ্ধির প্রলোভন দেখিয়ে লিটনের সাথে একাধিকবার সম-কামি যৌন সঙ্গম করে বিকৃত মানসিকতা সৃষ্টি করেন। এর পর থেকে কবিরাজ বারেকের নির্দেশে লিটন বিভিন্ন পুরুষ ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক করে প্রকৃতির নিয়মের বাহিরে যৌন সঙ্গম করে এবং পরিকল্পনা মোতাবেক পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও চোখের মনি সংগ্রহের নিমিত্তে নর-হত্যার চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে।
Leave a Reply