এস, এম মুসতাইন : “অন্ধ” চোখে দেখে না পড়ালেখা করেনি তারপরও গানের কন্ঠ মধুর। ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতই প্রিয়, ঘটি বাটি গামলা বাজিয় রেডিও টিভিতে গান শুনে মাঠে ঘাটে গলা ছেড়ে গাইতে গাইতে মনের কুঠিরে ঠাই করে দিয়েছে বাংলাদেশের অনেক খ্যাতি শিল্পীর সংগীত। জীবন যুদ্ধে জয়ী হতে হাটে বাজারে ঘুরে ঘুরে মানুষকে বিনোদন দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাঘারপাড়া উপজেলার বাসুয়াড়ী ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের মোঃ আছর আলীর ছেলে জন্মগত অন্ধত্ব আলামিন (২৫)। পিতা-মাতার শত কষ্টের মধ্যেও মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ছেলেকে তিলে তিলে বড় করেছেন। আশার সংসারে অন্ধ প্রতিবন্ধী কি করবে, কে খাওয়াবে আয় রোজগার করে ভাবতে ভাবতে জীবন পার করে দিয়েছে পরিবারের মানুষ। দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করা ভাল কাজ নয়, তাই বেচে থাকার তাগিদে স্বপ্ন পুরনে হাটে বাজারে সংগীত প্রেমিদের আনন্দ খুশি করে মন জয় করে দু’একটি টাকা চেয়ে নিয়ে সংসার চালিয়ে আসছে আলামিন। বসুন্দিয়ার আলাদীপুর বাজারে সন্ধ্যার পর একটি চায়ের দোকানের সামনে হঠাৎ জনগনের ভীড় পড়ে গেছে মনোযোগ সহকারে গান শুনছে। উকি দিয়ে দেখা মিললো অন্ধ এক যুবক মাইক হাতে গান করছে। আর জনগন নিরবে তার অসাধারণ কন্ঠের সংগীতে মগ্নতায় ১০/১২ টি গান শোনান মানুষকে। একান্ত সাক্ষাৎকারে সত্যপাঠ প্রতিবেদক-কে জানায় তার জীবনের গল্প, পিতা একজন হতদরিদ্র ভ্যান চালিয়ে কোনরকম সংসারের হাল ধরে আছেন মা গৃহিণী। আমি অন্ধ প্রতিবন্ধী বলে সবাই অবহেলা করে এড়িয়ে চলেন। ছোট বেলা থেকে স্বপ্ন দেখতাম কন্ঠ শিল্পী হবো, পৃথিবীতে তো অনেক অন্ধরা গান করেন। আমি কেন গাইতে পারবো না। প্রতিজ্ঞা এসে যায় মনের ভিতর তখন থেকেই রেডিও টেলিভিশনের সংগীতানুষ্ঠন মনযোগ সহকারে শুনতাম। সেই ভাবেই ধৈর্যের সাথে খেয়াল করে করে আজ মানুষ-কে একটু আনন্দ দান করেছি। আরো জানায়, যশোর জেলার বাইরে এখনও গান গাইতে যায়নি। তবে বাঘারপাড়া, নারকেলবাড়িয়া, খাজুরা, যশোর বেনাপোল, মনিরামপুর, কেশবপুর, অভয়নগর নওয়াপাড়া, চেংগুটিয়া, ভাংগাগেট, বসুন্দিয়া চাড়াভিটা বাজার গুলোতে ঘুরে ঘুরে গান করে জনগনকে আনন্দ খুশি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমার বাবা-মা সহ আত্মীয় স্বজনদের ইচ্ছা অন্ধ শিল্পী হিসেবে সারা দেশের মানুষের কাছে পরিচিত হওয়ার আকাঙ্খা। রেডিও টেলিভিশনে গান গাওয়ারও স্বপ্ন রয়েছে। কোন স্ব-হৃদয়বান ব্যক্তি হাত এগিয়ে দিলে হয়তো একদিন স্বপ্নচুড়ায় পৌঁছাতে সম্ভব এমনই প্রত্যাশা স্বজনদের। কয়েকজন সংগীত ভক্তরা বলেন, আলামিনের দরদী কন্ঠ সহজেই সংগীত প্রেমিদের মুগ্ধ করে ভক্ত বানিয়ে ফেলার মতো সাহসও রয়েছে তার মধ্যে। যারফলে দেশের সংগীত প্রিয় বিত্তবান খ্যাতি সম্পন্ন গীতিকার সুরকার ও টেলিভিশনের কর্মকর্তারা অন্ধর প্রতি এগিয়ে আসলে একদিন মা-বাবা আত্মীয় স্বজন সহ অসংখ্য ভকবৃন্দের দোয়াতে স্বপ্ন পুরোনের সম্ভবনায় পৌঁছাতে পরবে আলামিন।
Leave a Reply